হাফিজুর রহমান,(সরিষাবাড়ী)জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্বামীর পরকিয়া প্রেমের কারণে ঘর ছাড়তে হলো দেড় বছরের শিশুকন্যা নিয়ে মাকে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায় সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড়ের বলার দিয়ার উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দীনের ছেলে রফিক মিয়া (২৪) ও সরিষাবাড়ী ডোয়াইল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মাজালিয়া গ্রামের কিসমত আলীর মেয়ে শিখা আক্তার (২১) এর সাথে বাংলাদেশ মুসলিম বিবাহের পারিবারিক আইন অনুসারে সকল নিয়ম ধারা মেনেই বিবাহ সম্পূর্ণ হয়।
বিবাহের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল এবং দুটি পরিবারের যথেষ্ট সমন্বয় ও আন্তরিকতা ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু তাদের ঘর আলো করে যখনি একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয় ঠিক তখনি ফুটে উঠে ঘুমন্ত চিত্তের নারী লোভী রফিকের অভিনব দৃশ্যায়ন। রফিক তার স্ত্রী শিখার সাথে অমানবিক আচরণ করতে থাকে প্রায়ই, যার কারণে শিখা বাপের বাড়ীতে গেলে আর আসতে চাইতো না। এই নিয়ে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে মনমালিন্যতা সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়।
এদিকে রফিক ২নং পোগলদীঘা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রুদ্র বয়ড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান মিরুর দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের সহধর্মীনি শাহানা আক্তার শাহিদাকে পরকিয়া প্রেমের কারিশমায় ভাগিয়ে নিয়ে আসে তার বাড়ীতে। শাহিদার সাবেক স্বামী মিরুকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,আমি শাহিদাকে নিয়ে দীর্ঘ বিশ বছর ঘরসংসার করেছি এবং একসাথে ঢাকাতে ছিলাম অনেক বছর কিন্তু কিছুদিন পূর্বে আমি হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ঢাকায় স্ত্রী ও মেয়ে নিশাত সুলতানা (১৪)কে রেখে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসি এবং সুস্থ্য হওয়ার পরে আমি আর ঢাকায় যায়নি।
কথা ছিল মেয়ের জেএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই চলে আসবে শাহিদা। কিন্তু শাহিদা চলে আসল ঠিকই,সেটা আমার বাড়ীতে নয় পরকিয়ার প্রেমের টানে প্রেমীকের বাড়ীতে। শাহিদা আক্তার নতুন সংসারে পা রেখেই সাবেক স্বামী মিরুকে তালাকনামা পাঠিয়ে দিয়ে নতুন করে বিয়ে করেন প্রেমিক রফিককে। কিন্তু তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,রফিক দ্বিতীয় বিয়ে করার সময় তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই করেছেন এবং মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ আইনের ধারা ৬ মতে দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের নিকট হতে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না এবং কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।
শুধু তাই নয়, প্রথম স্ত্রী রেখে দ্বিতীয় বিবাহ করিলে প্রথম স্ত্রীর দেন মোহর সাথেসাথে পরিশোধ করিতে হইবে নতুবা দেন মোহরের সমপরিমাণ সম্পদ লিখে দিতে হইবে বলে আইনে উল্লেখ আছে। কিন্তু রফিক এর কোনটিই করেনি বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় বিচারিক ব্যবস্থার নিয়মকানুন উপেক্ষা করে দ্বিতীয় বিবাহের নিবন্ধন ছাড়াই মুন্সী দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে দিব্যি সংসার করছে। এদিকে হতদরিদ্র দিনমজুর শিখার বাবা নিরুপায় হয়ে রফিকের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা করেছেন বলে জানা যায়। শিখার হতদরিদ্র বাবা মা অশ্রুঝরা আহাজারি কন্ঠে বলেন দেশে কি আইন নাই,রফিকের মত নারী লোভী অমানুষের বিচার কি হবে না ?
