ব্রেকিং নিউজ

মোদিকে দিল্লী সামলানোর পরামর্শ মমতার

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বুধবার সবচেয়ে উত্তপ্ত ক্ষেত্র ছিল পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে একই দিনে লোকসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দুপুর ও বিকেলে দুদফা জনসভা করেন মোদি। স্বাভাবিকভাবেই তার আক্রমণের মূল নিশানা ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মোদির জনসভা শেষের আগ দিয়েই কুচবিহারে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ান মমতা। মোদির আক্রমণের জবাব নয় বরং তীব্র পাল্টাহামলা চালান তিনি। মোদির উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘বাংলার সঙ্গে পাল্লা নিয়ে কোনও লাভ নেই। আগে দিল্লি সামলান।’

বুধবার রাজ্যের নির্ধারিত দুটি জনসভায় ভাষণ প্রদান করেন মোদি। প্রথমটি করেন শিলিগুড়িতে। মোদি বাংলায় বক্তব্য শুরু করে বলেন, ‘শিলিগুড়ির মানুষকে প্রণাম। আপনারা নিশ্চয় সবাই ভালো আছেন।’ এরপরই মমতাকে আক্রমণ শুরু করেন মোদি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ আপনাদের সমর্থন পেয়ে। শক্তিশালী বিশ্বাসের জন্য আপনাদের এই চৌকিদার বড় বোয়ালদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারছে। গেল পাঁচ বছরে দেশে উন্নয়নে আপনাদের সহযোগিতা পেয়েছি। সেই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মোদি বলেন, তিনি বাংলার বিকাশে স্পিড ব্রেকার হয়ে বাধার সৃষ্টি করছেন। তার পাশাপাশি বালাকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অভিযান নিয়েও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন তিনি।

মমতা কোচবিহারের দিনহাটায় এক জনসভায় পাল্টা আক্রমণ করে মোদির উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলায় ৪২ আসনে একটা তো পেয়ে দেখাও। টাচ মি ইফ ইউ ক্যান। ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান। বাংলার সঙ্গে পাঙ্গা নিয়ে কোনও লাভ নেই। আগে দিল্লি সামলা। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলা।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এখন মোদিবাবুকে এক্সপায়ারি বাবু বলে ডাকব। উনি আর প্রধানমন্ত্রী নন। উনি বলেছেন, আমরা উন্নয়ন করিনি। কেন এ কথা বললেন, কৈফিয়ত দিন। আমি তর্কের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। উনি গায়ের জোরে মিথ্যা বলছেন। উনি এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার।’

ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, বিজেপি’র শাষণামলে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। একই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘কোচবিহারে ছিটমহলের সমস্যার সমাধান করেছি। জমি নিয়ে জট কাটিয়েছি। এক হাজার ১০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে ছিটমহলের উন্নয়নের জন্য।’

পাশাপাশি বলেন, ‘কৃষকদের টাকা, শস্যবীমার টাকা, খাজনা মওকুফের টাকা, সব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। পরিবারের লোকের কাছে জমি হস্তান্তর করতে গেলে মিউটেশন ফিও তুলে দেওয়া হয়েছে। আর মোদি শুধু দেশের সংকট বাড়িয়েই চলেছেন।

আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোটপর্ব। সাত দফায় এই ভোটগ্রহণ শেষ হবে ১৯ মে। ফল প্রকাশ হবে ২৩ মে।

নির্বাচিত মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে লোকসভার আসন ৪২টি। বর্ধমান লেকাসভায় ৩৪ আসন আছে তৃণমূলের। আসন্ন নির্বাচনে তারা ৪২ আসনেই জয় ছিনিয়ে আনতে চায়।

পশ্চিমবঙ্গে এখন দুটি আসন বিজেপির। তারা এবার ২৩ আসনের লক্ষ্য নিয়ে লড়ছে। বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস নিজেদের মধ্যে কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করেনি।

Leave a Reply