টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ইলেক্ট্রনিক্স, কসমেট্রিকস্, কনফেকশনারী এমনকি ওয়ার্কশপ দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। সরকারী নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে অতি লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে প্রায় দুই লক্ষ মানুষের বসবাস। একদিকে জ্বালানি কাঠের দাম বৃদ্ধি অপরদিকে বিভিন্ন স্থানে পাকা দালান গড়ে উঠায় সাধারণ মানুষ সিলিন্ডার গ্যাসের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ে। পাশাপাশি চায়ের দোকান ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও জ্বালানি কাঠের পরিবর্তে ছোট-বড় গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে।
ধনবাড়ী উপজেলার ভাইঘাট এলাকার ছানোয়ার হোসেনের লামমনি মাল্টিমিডিয়া, রাসেল মিয়ার আল মদিনা, রঞ্জু মিয়ার এনআর এম ট্রেডার্স, ধনবাড়ী পৌর শহর , আমবাগান , কেন্দুয়া বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দেড়শতাধিক দোকানে ওরিয়ন, পেট্টি, লাভস্, বসুন্ধরা , যমুনা ও বিভিন্ন কো: এর এলপি গ্যাস সিলিন্ডারে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি মরিচা ধরা গ্যাস সিলিন্ডারও বাজারে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি নিম্নমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহের পাইপ ও নিম্নমানের চুলাও বাজারে মিলছে খুব সহজেই।
সরকারী নিয়ম অনুসারে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দোকানঘর, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু এইসব নিয়মকানুন, লাইসেন্স ছাড়াই চলছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার রমরমা ব্যবসা। এই ব্যবসাকে আরও লাভবান হিসেবে ধরে নিয়ে ব্যবসায়ীরা একই দোকানে পাশাপাশি পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন এই সব জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন।
গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের কাছে ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স সহ সরকারী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে ভাইঘাট এলাকার লামমনি মাল্টিমিডিয়ার ছানোয়ার হোসেনের ও আল মদিনার স্বত্বাধিকারী রাসেল মিয়া জানান, আমরা ধনবাড়ীর গ্যাস সিলিন্ডারের বড় বাবসায়ী বাবু ভাইয়ের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করছি। কাগজপত্রের ব্যাপারে বাবু ভাই বলছে আমিই করে দিব। এ প্রতিবেদককে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ব্যাপারে তারা কোন সুদউত্তর দিতে পারিনি।
ধনবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ জানান, ধনবাড়ী উপজেলায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসার জন্য নামমাত্র কয়েকজন অনুমতি নিয়েছেন। এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানগুলোতে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের লাইসেন্স, ডকুমেন্ট রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় মহড়া করে যে সব বাজারের দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন তাদের আমরা সময় দিয়ে বুঝিয়ে বলে আসি ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করার জন্য বলে যাচ্ছি।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সিদ্দিকা বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য জ্বালানি অধিদপ্তর থেকে অনুমতিপত্র অবশ্যই প্রয়োজন। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে কিছু দিনের মধ্যে অভিযান চালানো হবে।