ব্রেকিং নিউজ

আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস

আবাহনীর বদলি মিডফিল্ডার ইমতিয়াজ সুলতান জিতুর শট ঠেকিয়ে বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো নিজেই গেলেন দলের অষ্টম পেনাল্টি কিক নিতে। মাঝবৃত্তে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো সতীর্থরা তখন নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলেন জিকোকে।

কিন্তু বসুন্ধরা কিংসকে সেমিফাইনালে তোলা জিকো তাতে ভ্রক্ষেপ না করে শট নিয়ে কাঁপিয়ে দিলেন আবাহনীর জাল। সাডেন ডেথে ৭-৬ গোলে জয় নিশ্চিত হলো বসুন্ধরা কিংসের। ফেডারেশন কাপের পর স্বাধীনতা কাপের ফাইনালেও উঠে গেলো প্রিমিয়ার লিগের নবাগত দলটি।

বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়, কোচ কর্মকর্তাদের দৌড় তখন জিকোর দিকে। মুহূর্তেই সতীর্থদের মাঝে হারিয়ে গেলেন জাতীয় দলের এ গোলরক্ষক। যে আবাহনীর কাছে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে হেরে এএফসি কাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বসুন্ধরা কিংসের, সেই আবাহনীর বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ নিয়েই স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে উঠলো তারা। ২৬ ডিসেম্বর ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।

নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। স্কোর বদলায়নি অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও। আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের সেমিফাইনাল গড়ায় টাইব্রেকারে। ৫ শটের চারটি করে গোল পায় দুই দল। টাইব্রেকার পর্ব ৪-৪ হওয়ায় সাডেনডেথে গড়ায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালের লড়াই।

টাইব্রেকারে আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্টের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে, বসুন্ধরা কিংসের কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড কলিন্দ্রেসের শট আটকে দেন আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল। বিশ্বকাপ খেলা কলিন্দ্রেসের শটে গোল হলে টাইব্রেকারেই নির্ধারণ হতো ভাগ্য। হয়নি। আবাহনী চাঙ্গা- রায়হান ও টুটুল হোসেন বাদশা গোল করে সাডেনডেথেও সমান তালে এগুতে থাকে আকাশি-হলুদরা।

কিন্তু কে জানতো কোয়ার্টার ফাইনালের মতো বসুন্ধরা কিংসের সেমিফাইনাল জয়ের নায়কও হবেন গোলরক্ষক। কেউ না জানলেও আস্থা ছিলো একজনের- তিনি দলের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন। ৯০ মিনিটের খেলা শেষে খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে কোচ বলেছিলেন, ‘নো টেনশ, উই হ্যাভ জিকো।’ সেই জিকোই হাসিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসকে।

নিজেই কিক নিলেন কী ভেবে? আত্মবিশ্বাস ছিল? ‘জিতুর শট ঠেকানোর পর আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। পারবো- এ বিশ্বাস নিয়েই শট নিয়েছি। আমি আগেও অনেক গোল করেছি’- ম্যাচসেরা পুরস্কারের ট্রফি হাতে নিয়ে বলছিলেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক।

আগের দিন পেনাল্টি শট অনুশীলনের সময় স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন নিজেই পরীক্ষা নিয়েছিলেন জিকোর। কোচের দুটি শটই ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন জিকো। সাবাশ! বলে পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন স্প্যানিশ ভদ্রলোক। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে তো বুকের মধ্যেই চেপে ধরলেন।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় আগে গোল করেছিল বসুন্ধরা কিংস। ৬৯ মিনিটে মতিন মিয়ার করা গোল অবশ্য ধরে রাখতে পারেনি বসুন্ধরা। ৮২ মিনিটে সমতা ফেরান আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্ট।

Leave a Reply